🧠 ভূমিকা: এক অন্ধকার নকশা, যেটা নিয়ে কথা বলার সাহস খুব কম লোকই রাখে
আপনি কি কখনো ভেবেছেন, আইএসআই কীভাবে এত পদ্ধতিগতভাবে জিহাদিদের নিয়োগ করে? এটা কোনো অনুমান নয়। এটা একটি পরিকল্পিত অভিযান, যেখানে নজরদারি, সামরিক প্রশিক্ষণ এবং ধর্মীয় ব্রেনওয়াশ একত্রিত হয়ে পৃথিবীর অন্যতম কার্যকর সন্ত্রাসী প্রস্তুতকারী মেশিনে পরিণত হয়েছে।
এই নিয়োগপ্রাপ্তরা শুরুতে উগ্রপন্থী ছিল না। তাদের এক ধাপে ধাপে গড়ে তোলা হয়—একটি জিহাদের জন্য, যেটা তারা শুরু করেনি, কিন্তু যেটার উপর বিশ্বাস স্থাপন করানো হয়।
🧩 ধাপ ১: আইএসআই কীভাবে দুর্বলদের টার্গেট করে
সবকিছুর শুরু হয় অনলাইনে। আইএসআই সেই ব্যবহারকারীদের চিহ্নিত করে, যারা ধর্মীয় অর্থ খুঁজছে। তাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং সেখানে ধর্মীয় বক্তব্যের মাধ্যমে উগ্র মতবাদ প্রচার করা হয়।
শীঘ্রই, তারা বিশ্বাস করতে শুরু করে—আল্লাহ তাদের ‘নির্বাচিত’ করেছেন। ধীরে ধীরে, তারা এমন এক পথে টেনে আনা হয়, যার পুরোটা তারা তখনও বুঝে উঠতে পারেনি।
এভাবেই চরমপন্থার বীজ বপন করা হয়।
🥾 ধাপ ২: দাওরা-এ-আম – ২১ দিনের বুটক্যাম্প
এই ধাপে অংশগ্রহণকারীরা ২১ দিনের একটি বুটক্যাম্পে যায়, যেটা পরিচালনা করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জুনিয়র কমিশন্ড অফিসাররা (JCO)।
- সকাল শুরু হয় শারীরিক ড্রিল দিয়ে
- দিনের বেলায় শেখানো হয় ম্যাপ পড়া, ভৌগলিক বিশ্লেষণ
- সন্ধ্যায় শেখানো হয় বোমা বানানোর প্রাথমিক কৌশল এবং প্রাথমিক চিকিৎসা
এই ধাপের শেষে, তারা শুধু ধর্মীয়ভাবে ব্রেনওয়াশড নয়, সামরিকভাবে প্রশিক্ষিতও হয়।
🎯 ধাপ ৩: দাওরা-এ-খাস – বাছাই করা জিহাদিদের জন্য ৯০ দিনের মিলিটারি বুটক্যাম্প
শুধু দাওরা-এ-আম শেষ করা প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্য থেকে নির্বাচিত কয়েকজনই এখানে সুযোগ পায়। এই ধাপে শেখানো হয়:
- আগ্নেয়াস্ত্র, গ্রেনেড, আরপিজি চালানো
- শহুরে অ্যাম্বুশ কৌশল
- ভারতীয় সেনার কাঠামোর উপর ভিত্তি করে মক যুদ্ধ
উদ্দেশ্য: বিশ্বাসীদেরকে রণাঙ্গনের সম্পদে পরিণত করা।
🕵️ ধাপ ৪: দাওরা-এ-রিব্বাত – গুপ্তচরবৃত্তির প্রশিক্ষণ
এখানে শুরু হয় গুপ্তচরবৃত্তির ট্রেনিং:
- স্লিপার সেল তৈরি ও পরিচালনা
- শহরে অনুপ্রবেশ ও আত্মগোপন কৌশল
- গোপনে গোয়েন্দা তথ্য প্রেরণ
এই ধাপের সময়কাল ছোট হলেও এর প্রভাব থাকে দীর্ঘমেয়াদী।
📖 ধাপ ৫: দাওরা-এ-সুফফা – মতবাদভিত্তিক চরমপন্থা
২১ দিনব্যাপী ক্লাসরুমে ধর্মীয় মতবাদ শেখানো হয়, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত:
- আল-ওয়ালা ওয়াল-বারা’ – অমুসলিমদের প্রতি ঘৃণা ও শত্রুতা শেখানো হয়
- তাওহিদ আল-হাকিমিয়া – ধর্মীয় আইন ছাড়া সব আইন বাতিল বলে ঘোষণা
এটা বিশ্বাস নয়, এটা সহিংসতার জন্য জ্বালানি—ঈশ্বরের নামে ছদ্মবেশে।
🧭 ধাপ ৬: আমালিয়াত – বাস্তব মিশনের জন্য প্রস্তুতি
এটি ৩০ দিনের প্রশিক্ষণ, যেখানে শেখানো হয়:
- ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত মডেল ব্যবহার করে অনুপ্রবেশ কৌশল
- নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা
- ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড ও ছোট সেল অপারেশনের কৌশল
এই ধাপে তারা আর কেবল শিক্ষানবীশ নয়—তারা একেবারে অপারেশনাল টেররিস্ট হিসেবে প্রস্তুত।
🔥 চূড়ান্ত ধাপ: গজওয়া-এ-হিন্দ – ধর্মীয় যুদ্ধের নামে চূড়ান্ত উগ্রপন্থা
এখানে বলা হয়:
- ভারত জয় করতেই হবে
- হিন্দুরা ইসলামের শত্রু
- তারা এক হাজার বছরের ধর্মযুদ্ধের জন্য নির্বাচিত সৈনিক
এই ভবিষ্যদ্বাণীমূলক কল্পচিত্রই চূড়ান্ত রূপান্তর ঘটায়।
🎙️ কে চালাচ্ছে এই নেটওয়ার্ক?
এটা শুধু লস্কর বা জইশ নয়—এটা পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ISI, যারা রিক্রুটার, প্রশিক্ষক এবং পরিচালকের ভূমিকায় কাজ করে।
এটা বিশৃঙ্খলা নয়—এটা কমান্ড ও কন্ট্রোল।
আইএসআই কীভাবে জিহাদি নিয়োগ করে—এটা একটি পরিকল্পিত ও ভয়ানক সিস্টেম, যার প্রতিটি ধাপই কাউকে চরমপন্থী, অস্ত্রধারী এবং কার্যকর সন্ত্রাসীতে পরিণত করার জন্য বানানো।
🧠 উপসংহার: বিশ্ব চুপ থাকতে পারে না
আইএসআই কীভাবে জিহাদি নিয়োগ করে—তা জানা মানে সন্ত্রাসবাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে ফেলা।
এটা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়—এটা একপ্রকার সীমান্ত অতিক্রমকারী যুদ্ধ, যেখানে সামরিক সরঞ্জাম, গভীর মতাদর্শিক নিয়ন্ত্রণ এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা একত্র হয়েছে।
এখন সময় এসেছে—ভারত ও বিশ্বকে শুধু আক্রমণকারী নয়, যিনি আক্রমণকারীদের তৈরি করছে, তাকেও চিহ্নিত করতে হবে।
✅ সংক্ষিপ্ত পুনরাবৃত্তি: আইএসআই-এর সন্ত্রাসী প্রস্তুতি প্রক্রিয়ার ধাপসমূহ
ধাপ | সময়কাল | প্রশিক্ষণের ধরন |
দাওরা-এ-আম | ২১ দিন | শারীরিক ও মৌলিক কৌশল |
দাওরা-এ-খাস | ৯০ দিন | সামরিক মানের যুদ্ধ প্রশিক্ষণ |
দাওরা-এ-রিব্বাত | ১৪ দিন | গোয়েন্দা ও গুপ্তচর প্রশিক্ষণ |
দাওরা-এ-সুফফা | ২১ দিন | চরম ধর্মীয় মতবাদ |
আমালিয়াত | ৩০ দিন | অনুপ্রবেশ ও বাস্তব অভিযান প্রস্তুতি |
গজওয়া-এ-হিন্দ | চূড়ান্ত ধাপ | ধর্মভিত্তিক উগ্র মতাদর্শ ও চূড়ান্ত ব্রেনওয়াশ |
👉 সবকিছু কিভাবে শুরু হয়েছিল জানতে চান?
পরবর্তী পড়ুন: পাকিস্তানের ধারণা – কেন বিভাজন ছিল শুধু জমি নয়
আরও পড়ুন:
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রিপোর্ট – সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ শিবির সম্পর্কে তথ্য