`একটি কার্যকর গণতন্ত্রে, ধর্ম ব্যক্তিগত এবং রাজনীতি জনসমক্ষে হয়।
কিন্তু ভারতে, মোলভি-এমএলএ জোট এর সম্পূর্ণ বিপরীত নিশ্চিত করে—
ধর্ম মাইক লাগিয়ে ছাদ থেকে প্রচার করা হয়,
আর রাজনীতি চলে মসজিদ, দরগাহ আর বিরিয়ানিভর্তি ড্রইং রুমে চুপি চুপি।
এটা ধর্মনিরপেক্ষতা নয়।
এটা এক রাজনৈতিক পঞ্জি স্কিম, যেখানে বিশ্বাস মুদ্রা এবং ভোট ফতোয়ার মতো কাটা হয়।
ভোট জিহাদের গঠন: মোলভি কী নিয়ে আসে এই চুক্তিতে
চলুন খুঁটিনাটি দেখি:
আজকের মোলভি শুধু ধর্মীয় মানুষ নন। তিনি হলেন:
- বুথ ম্যানেজার
- বার্তাবাহক
- এবং সবচেয়ে ভয়ঙ্কর—একজন সম্প্রদায় সংগঠক।
নির্বাচনের সময় তিনি ধর্ম নিয়ে কথা বলেন না—
তিনি বলেন: “কারা আমাদের, কারা ওদের”—
আপনজন বনাম শত্রু, একরকম মগজ ধোলাই।
এটা খুৎবা নয়। এটা হলো রাজনৈতিক কোডিং, ধর্মের মুখোশ পরে।

এমএলএর ভূমিকাঃ দাড়ি কেনো, ভোট পকেটে ভরো
এমএলএ, সাধারণত কাগজে সেক্যুলার, আচরণে সুবিধাবাদী।
তিনি জানেন এই খেলার নিয়ম:
- একবার মসজিদ সফর = ৫,০০০ ভোট
- এক ইফতার = উর্দু পত্রিকায় হেডলাইন
- এক উর্দু শের = লিবারাল ক্লাবে প্রবেশপত্র
বিনিময়ে?
- মুসলিম স্কুলে ড্রপআউট রেট? আলোচনা নেই
- অবৈধ মাদ্রাসা? চুপ
- মহিলাদের অংশগ্রহণ? তলানিতে
এমএলএ নীরবতা কেনে, মোলভি আনুগত্য বিক্রি করেন,
আর ভোটারকে বলা হয়—“শুকরিয়া আদায় করো।”
বাস্তব উদাহরণ: কিভাবে এই জোট ব্যালট হাইজ্যাক করেছে
1. উত্তরপ্রদেশ – মোলভি-এমএলএ পাওয়ার গ্রিড
সাম্ভল, রামপুর, বিজনোর—এই এলাকায় বেরেলভি ও দেওবন্দি মৌলভিদের উপর ভোট নির্ভর করে।
২০১৭ ও ২০২২ সালে, AIMIM প্রার্থী এলে, স্থানীয় মোলভিদের সমর্থনে থাকা পুরনো এমএলএ-রা তাদের দড়ি টেনে হটিয়ে দেয়।
সাহারানপুরে এক দেওবন্দি মোলভি জুমার খুৎবায় বলেন:
“ভোট শুধু অধিকার নয়, এটা তোমার ঈমান। ইসলাম রক্ষাকারীদের ভোট দাও।”
সেক্যুলার? উর্দুতেও না।
2. পশ্চিমবঙ্গ – দাড়ি ধোয়া ধর্মনিরপেক্ষতা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যত্নে গড়া জোটের বৈশিষ্ট্য:
- ইমামরা মঞ্চে ভোট নির্দেশনা দেন
- রাজ্য থেকে মাসিক ভাতা
- বিরোধীদের বিরুদ্ধে ফতোয়া
২০২১ সালে, ইমাম নুরুর রহমান বারকাতি বলেছিলেন:
“দিদির বিরোধীরা ইসলামবিরোধী।”
FIR? হয়নি।
কিন্তু BJP কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে—এই নাটক প্রশ্ন করায়!
3. কেরালা – সবথেকে শান্ত ভোট ব্যাংক
IUML (ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগ) মোলভি-এমএলএ জোটের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ।
মালাপ্পুরাম, কোঝিকোড়, কান্নুরে:
- এমএলএ মসজিদে কৌশলগত বৈঠক করেন
- মোলভিরা বলেন “কাকে ভোট দেবেন”
“প্রগ্রেসিভ মুসলিম” নাম দিয়ে, তিন তালাক, লিঙ্গ সংস্কার, বা মেয়েদের শিক্ষকতা—সব চাপা পড়ে যায়।
প্রতীকবাদ কৌশল: কীভাবে জোট সেক্যুলার নাটক মঞ্চস্থ করে
প্যাকেজটি খুব সাধারণ:
- এক মাদ্রাসা রঙিন হয়
- এক স্কলারশিপ ঘোষণা হয় (পরীক্ষা হয় না)
- এক উর্দু কবি দূরদর্শনে
- এক ইসলামোফোবিয়া সংক্রান্ত বিবৃতি সংসদে
মাটিতে?
- মুসলিম নারীর নিরাপত্তা বাড়ে না
- মাদ্রাসা আধুনিক হয় না
- STEM বা entrepreneurship-এ মুসলমানদের অংশগ্রহণ বাড়ে না
এটা “প্রতিনিধিত্বের মুখোশে ভোট শিকার।”
এটা কি শুধু ‘কমিউনিটি রিপ্রেজেন্টেশন’?
না। প্রতিনিধিত্ব উন্নয়ন আনে।
এখানে আসে ধর্মীয় নিয়ন্ত্রণ।
এই জোট নিশ্চিত করে যে:
- ইমাম > উদ্যোক্তা
- খুৎবা > সিলেবাস
- ভিক্টিমহুডকে অস্ত্র করা হয়, উন্নয়ন ঠাণ্ডা করা হয়
আসল ভিক্টিম কারা? শিক্ষিত, স্বাধীনচেতা মুসলিম যুবা
- হিজাবছাড়া মেয়েরা
- চাকরি খোঁজে এমন ছেলেরা
- ধর্ম নয়, যোগ্যতা ভিত্তিক ভোট দিতে চায় যারা
তাদেরকে বানানো হয়:
- “সংখ্যালঘু ভোট”
- “ভঙ্গুর আবেগবিশিষ্ট”
- “সহজে আঘাতপ্রাপ্ত”
এটা ক্ষমতায়ন নয়—কৌশলগত শিশুসুলভীকরণ।
মিডিয়া: নির্বাচিত স্মৃতিভ্রংশ + সহানুভূতিশীল হেডলাইন
- পুরোহিত প্রচার করলে? “সাম্প্রদায়িকতা!”
- ইমাম প্রচার করলে? “সম্প্রদায়িক সংহতি!”
- হিন্দু প্রার্থী রাম বললে? “হিন্দুত্বের বিপদ!”
- মুসলিম প্রার্থী আল্লাহ বললে? “সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য!”
এই দ্বৈত মান মোলভি-এমএলএ জোটকে নিরাপদ ঢাল দেয়।
কি করা উচিত? ধর্ম নয়, জোট ভাঙুন
লক্ষ্য: ইসলাম নয়—ধর্মীয় প্রভাব ও রাজনৈতিক শক্তির বিচ্ছেদ।
প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ:
- নির্বাচন কমিশনের ধর্মীয় প্রচারবিরোধী নিয়ম কঠোরভাবে মানুন
- মাদ্রাসা তহবিল অডিট করুন
- প্রকৃত মুসলিম নেতাদের সামনে আনুন—ডাক্তার, শিক্ষক, উদ্যোক্তা
- মুসলিম নারীদের প্রকৃত নেতৃত্বে আনুন
- মিডিয়ার পক্ষপাত উন্মোচন করুন
শেষ কথা: দাড়িওয়ালাদের ব্যালট রাজত্ব ভাঙুন
মোলভি-এমএলএ জোট স্রেফ রাজনীতির কৌতুক নয়—
এটা এক সংক্রামক গঠন, যেখানে ভয়, প্রতীক এবং সংস্কারহীনতা লুপে চলে।
এটা ধর্মনিরপেক্ষতাকে নাটক বানায়,
ভোটারকে অভিনেতা বানায়,
উন্নয়ন নয়, বিভাজনকে পুরস্কার দেয়।
আর সবচেয়ে বিপজ্জনক?
যারা মুসলিম সমাজের প্রগতিশীল কণ্ঠস্বর—তাদের দমন করে।
ভারত যদি সত্যিই ধর্মনিরপেক্ষ হতে চায়,
তবে ভোট জিহাদ যন্ত্র ভেঙে ফেলতে হবে।
কারণ যেখানে দাড়ি ব্যালট ঠিক করে,
সেখানে গণতন্ত্র এক শেভ দূরে থিওক্রেসি থেকে।